
নিকুঞ্জ বালা পলাশ, বরিশাল

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র রহমাতুল্লাহ সাব্বিরের। এখনও চোখের ভেতরে বিঁধে রয়েছে ছররা গুলির একটি স্প্লিন্টার। মাঝে মধ্যে চোখের তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতে হয় সাব্বিরকে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন আহত যোদ্ধা হিসেবে আমার দেশ-এর কাছে নিজের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এরপরও এটা ভেবে স্বস্তি পাচ্ছি যে, একটি চোখের বিনিময়ে হলেও স্বৈরাচারী হাসিনার পতন দেখতে পারছি- এটাই বড় সান্ত্বনা, বড় সফলতা। তবে মাঝে মধ্যে অনেক কষ্ট পাই পরিবারের অচলাবস্থা দেখে।’
বৃদ্ধ মা ও দুই ভাইকে নিয়ে চার সদস্যের সংসার সাব্বিরের। তবে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনিই। পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবেন- এমন প্রত্যাশা ছিল বৃদ্ধা মায়ের।
সাব্বির বলেন, ‘বড় ভাই শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনিও কোনো উপার্জন করতে পারছেন না। ছোট ভাই এখনও পড়াশোনা করছে। সব মিলিয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি যেখানে পরিবারের হাল ধরার কথা, সেখানে নিজেই পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি।’
জানা যায়, অভাব-অনটনের সংসারে চিকিৎসার জন্য ৫ লাখের বেশি টাকার দেনা নিয়ে পুরো পরিবারটি এখন ডুবতে বসেছে। নিজের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে একান্ত সাক্ষাৎকারে সাব্বির বলেন, ‘সবেমাত্র বরিশাল সরকারি বিএম কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স-মাস্টার্স পাস করেছি। আমার মরহুম বাবা ও মা অনেক কষ্ট করে এবং অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। আমি ভালো একটি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরব- এমন আশায় ছিল বৃদ্ধা মা ও দুই ভাইয়ের। কিন্তু পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়ে সে আশা এখন অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে।’
সাব্বির বলেন, ’২৪-এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিই। ৯ জুলাই থেকে প্রতিদিন বিএম কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছি। সরকার পতনের আগের দিন, গত ৪ আগস্ট বিকাল ৫টায় চৌমাথা সিঅ্যান্ডবি রোড এলাকায় পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলির মুখে পড়ি আমরা।
এ সময় পুলিশের ছোড়া তিনটি ছররা গুলি আমার চোখে লাগে। গুলিতে রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে কাতরালে সহযোদ্ধারা আমাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই মাস চিকিৎসা শেষে আমাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।’
সাব্বির বলেন, ‘আমার চোখ থেকে দুটি স্প্লিন্টার বের করা সম্ভব হলেও একটি স্প্লিন্টার এখনও আমার চোখের মধ্যেই রয়ে গেছে, যা কখনও বের করা সম্ভব হবে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। পুলিশের গুলিতে আমার একটি চোখ সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি চোখ দিয়েও পুরোপুরি দেখতে পারছি না। পরিবারের অবস্থাও বেশ খারাপ।’ এ সময় তিনি অবিলম্বে সরকারকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের কর্মসংস্থানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিএম কলেজের সমন্বয়ক ফুজাইফা রহমান বলেন, ’২৪-এর অভ্যুত্থানের সাব্বির ছিলেন সামনের সারির একজন যোদ্ধা। এ কারণেই পুলিশের টার্গেটে ছিলেন তিনি। পুলিশের ছোড়া গুলিতে চোখ হারাতে হয়েছে তাকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের বরিশাল মহানগর শাখার সদস্য সচিব মো. সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জুলাইয়ের আহত যোদ্ধাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য সরকার ভালো কিছু করবে বলে আমরা আশাবাদী।’

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে পুলিশের ছোড়া গুলিতে চিরতরে নষ্ট হয়ে গেছে বরিশালের ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র রহমাতুল্লাহ সাব্বিরের। এখনও চোখের ভেতরে বিঁধে রয়েছে ছররা গুলির একটি স্প্লিন্টার। মাঝে মধ্যে চোখের তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতে হয় সাব্বিরকে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন আহত যোদ্ধা হিসেবে আমার দেশ-এর কাছে নিজের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এরপরও এটা ভেবে স্বস্তি পাচ্ছি যে, একটি চোখের বিনিময়ে হলেও স্বৈরাচারী হাসিনার পতন দেখতে পারছি- এটাই বড় সান্ত্বনা, বড় সফলতা। তবে মাঝে মধ্যে অনেক কষ্ট পাই পরিবারের অচলাবস্থা দেখে।’
বৃদ্ধ মা ও দুই ভাইকে নিয়ে চার সদস্যের সংসার সাব্বিরের। তবে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনিই। পড়াশোনা শেষ করে ভালো একটি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরবেন- এমন প্রত্যাশা ছিল বৃদ্ধা মায়ের।
সাব্বির বলেন, ‘বড় ভাই শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনিও কোনো উপার্জন করতে পারছেন না। ছোট ভাই এখনও পড়াশোনা করছে। সব মিলিয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আমি যেখানে পরিবারের হাল ধরার কথা, সেখানে নিজেই পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি।’
জানা যায়, অভাব-অনটনের সংসারে চিকিৎসার জন্য ৫ লাখের বেশি টাকার দেনা নিয়ে পুরো পরিবারটি এখন ডুবতে বসেছে। নিজের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে একান্ত সাক্ষাৎকারে সাব্বির বলেন, ‘সবেমাত্র বরিশাল সরকারি বিএম কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে অনার্স-মাস্টার্স পাস করেছি। আমার মরহুম বাবা ও মা অনেক কষ্ট করে এবং অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করে আমাকে লেখাপড়া করিয়েছেন। আমি ভালো একটি চাকরি করে পরিবারের হাল ধরব- এমন আশায় ছিল বৃদ্ধা মা ও দুই ভাইয়ের। কিন্তু পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়ে সে আশা এখন অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে।’
সাব্বির বলেন, ’২৪-এর জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই আমি ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিই। ৯ জুলাই থেকে প্রতিদিন বিএম কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিকবার পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছি। সরকার পতনের আগের দিন, গত ৪ আগস্ট বিকাল ৫টায় চৌমাথা সিঅ্যান্ডবি রোড এলাকায় পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলির মুখে পড়ি আমরা।
এ সময় পুলিশের ছোড়া তিনটি ছররা গুলি আমার চোখে লাগে। গুলিতে রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে কাতরালে সহযোদ্ধারা আমাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেন। আমার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ওই দিন রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুই মাস চিকিৎসা শেষে আমাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।’
সাব্বির বলেন, ‘আমার চোখ থেকে দুটি স্প্লিন্টার বের করা সম্ভব হলেও একটি স্প্লিন্টার এখনও আমার চোখের মধ্যেই রয়ে গেছে, যা কখনও বের করা সম্ভব হবে না বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। পুলিশের গুলিতে আমার একটি চোখ সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি চোখ দিয়েও পুরোপুরি দেখতে পারছি না। পরিবারের অবস্থাও বেশ খারাপ।’ এ সময় তিনি অবিলম্বে সরকারকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের কর্মসংস্থানের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিএম কলেজের সমন্বয়ক ফুজাইফা রহমান বলেন, ’২৪-এর অভ্যুত্থানের সাব্বির ছিলেন সামনের সারির একজন যোদ্ধা। এ কারণেই পুলিশের টার্গেটে ছিলেন তিনি। পুলিশের ছোড়া গুলিতে চোখ হারাতে হয়েছে তাকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের বরিশাল মহানগর শাখার সদস্য সচিব মো. সাহাদাত হোসেন বলেন, ‘জুলাইয়ের আহত যোদ্ধাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সব আহত ও শহীদ পরিবারের জন্য সরকার ভালো কিছু করবে বলে আমরা আশাবাদী।’

জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫
চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫
তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫